বর্তমানে বাংলাদেশে তাপপ্রবাহ চলতেছে। গত ৫৮ বছরের রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছে। সর্বনিম্ন ৩৫-৩৬ ডিগ্রিতে থেমে আছে। দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা এর চাইতেও বেশি। এই তাপপ্রবাহে ঘরে কিংবা বাইরে অবস্থান করা দুঃসহ হয়ে পড়েছে। প্রচন্ড গরমে আমাদের ত্বকে বিভিন্ন রকমের সমস্যা হচ্ছে। আপনার ত্বককে এই গরমে কিভাবে ভালো রাখবেন আজকে এই আর্টিকেলে আমরা সেই বিষয় নিয়ে কথা বলেছি।
অনেকেরই ধারণা, বুড়ো হলেই কেবল ত্বকে ভাঁজ পড়ে, ত্বক বুড়িয়ে যায়। কথাটি পুরোপুরি সত্য নয়। অনেক সময় অল্প বয়সীদেরও ত্বক বুড়িয়ে যেতে পারে। এর কারণ সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি। এ রশ্মির জন্য ত্বক বিবর্ণ হওয়া থেকে শুরু করে ত্বকের ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। এর প্রভাবে ত্বকের কোষগুলো মরে যায়, ত্বক স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য হারায়। তাই এই তীব্র গরমে ও প্রখর রোদে ত্বকের যত্নে একটু সতর্কতা প্রয়োজন।
এই গরমে আমাদের যা করণীয়ঃ
- ত্বক তরতাজা ও উজ্জ্বল রাখতে অতিরিক্ত সূর্যরশ্মি এড়িয়ে চলতে হবে। এ জন্য বাইরে বেরোলে ছাতা বা বড় কিনারাযুক্ত টুপি ব্যবহার করা যায়।
- ছাতা বা টুপির পরিবর্তে উৎকৃষ্ট মানের সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। মনে রাখতে হবে, সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম কেবল সূর্যের ‘বি’ অতিবেগুনি রশ্মিই প্রতিহত করতে সক্ষম। সান প্রটেকশন ফ্যাক্টর ১৫ থেকে ৩০-এর মধ্যে থাকা লোশন ব্যবহার করা ভালো।
- দিনে দুবার গোসল করুন এবং ক্ষারমুক্ত সাবান ব্যবহার করুন। এ ক্ষেত্রে ভালো কোনো বেবি সোপ বা গ্লিসারিন সাবান ব্যবহার করা ভালো।
- ত্বক বেশি শুষ্ক হলেও খারাপ। তাই ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষায় প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা দরকার। পাশাপাশি লেবুপানি পান করুন।
- ভেজা কাপড় পরে থাকলে ত্বকে দাদ হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই ঘামে ভেজা কাপড় পাল্টে শুষ্ক ও পাতলা কাপড় পরে নিতে হবে।
- ত্বক ভালো রাখতে ভিটামিন ‘এ’-যুক্ত খাবার শীত কিংবা গ্রীষ্ম সব সময়ই খাওয়া উচিত।
সতর্কতা
- গোসলের পর শরীরের ভাঁজগুলোয় যেন পানি জমে না থাকে, সে ব্যাপারে সচেষ্ট হোন। এসব স্থান ভেজা থাকলে সহজে ছত্রাক জন্মায়।
- ভাঁজযুক্ত স্থানে পাউডার ব্যবহার না করাই ভালো। পাউডারের সঙ্গে ঘাম মিশে ভেজা স্যাঁতসেঁতে অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে, যা ছত্রাক জন্মানোর পক্ষে আরও সহায়ক হতে পারে।
- গরমকালে তেল ব্যবহার না করাই ভালো।
মনে রাখুন
- যে ত্বকের রং যত সাদা, সে ত্বক সূর্যালোকে তত বেশি নাজুক।
- ত্বকে অতিরিক্ত অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করা ঠিক নয়। এতে ত্বক মোটা ও খসখসে হয়ে যায়।
সূর্যের আলো আমাদের ত্বককে দ্রুত ডিহাইড্রেট করতে পারে। তাই প্রচুর পানি পান করা উচিত। এতে ত্বক হাইড্রেটেড থাকবে। বাইরে গেলে একটি ওয়াটার বোতল বহন করুন। কারণ, ঘামের জন্য আমাদের শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। এ ছাড়া পানি সমৃদ্ধ ফল এবং শাকসবজি যেমন তরমুজ, শসা খান। এগুলো অতিরিক্ত পুষ্টি, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে। হাইড্রেটেড থাকলে ত্বক উজ্জ্বল দেখায়। ত্বকের বলিরেখাও প্রতিরোধ করে।
গরমে ঘাম বেশি হয়। মুখে ধুলো-বালি জমে। তাই বাইরে থেকে ফিরলে তো ভাল করে মুখ ধোবেনই। সেই সঙ্গে বাড়িতে লথাকলেও অন্তত তিবনার মুখ ধুয়ে নিন। স্নানের সময় জলে সামান্য দুধ মিশিয়ে নিন। এতে বাড়বে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য। সেই সঙ্গে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ক্লিনজিং মিল্ক দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। এছাড়াও কাঁচা দুধ, লেবুর রস আর মধু একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে নিন। তাই দিয়েও মুখ ধুয়ে নিতে পারেন। দুধ ত্বকের Ph ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। দুধ আর হলুদ একসঙ্গে মিশিয়ে মাখলে যে কোনও ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপ থেকে ত্বক রক্ষা পায়।