fbpx

ত্বকের যত্নে ও নিখুঁত মেকআপ পেতে গোলাপ জলের ব্যবহার Leave a comment

প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চায় গোলাপ জলের ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন নিতে গোলাপ জলের জুড়ি নেই। ত্বকের যত্ন থেকে শুরু করে চুলের যত্নেও গোলাপ জলের ব্যবহার করা হয়। রূপচর্চা থেকে শুরু করে মেকআপকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতেও পুরো পৃথিবী জুড়ে গোলাপ জল বা রোজ ওয়াটার ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে চলুন জেনে নেয়া যাক, ত্বকের যত্নে ও মেকআপ ব্যবহারে গোলাপ জলের ব্যবহার বিধি।

টোনার হিসেবে
টোনার হিসেবে গোলাপ জল খুবই উপকারী। গোলাপ জল টোনার হিসেবে ব্যবহার করলে ত্বকের অতিরিক্ত তেল কন্ট্রোল হয় এবং ত্বকের পি এইচ ভারসাম্য বজায় থাকে। ফেইস ওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করার পরেও আমাদের ত্বকের ভেতরে ময়লা জমে থাকে। টোনার হিসেবে গোলাপ জল ব্যবহার করলে তা ত্বকের ভেতরে থেকে সব ধরনের ময়লা বের করে আনে। আর সব ধরনের ত্বকেই গোলাপ জল টোনার হিসেবে খুব ভালো কাজ করে।

ময়েশ্চারাইজার হিসেবে
আমরা অনেক সময় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে আলসেমি করি বা ভুলে যাই। এমন দিনগুলোতে আপনার ত্বক সারাদিন জুড়েই কেমন খসখসে হয়ে থাকে। তাই এই দিনগুলোতে আপনি ময়েশ্চারাইজার হিসেবে স্প্রে করে নিতে পারেন রোজ ওয়াটার বা গোলাপ জল। ত্বকে সামান্য গোলাপ জল ব্যবহারে ত্বক তার হারানো ময়েশ্চার ফিরে পাবে এবং ত্বক থাকবে হাইড্রেটেড।

মেকআপ রিমুভ করতে
ত্বক থেকে মেকআপ তুলতে মেকআপ রিমুভারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন গোলাপ জল। কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল কটন প্যাডে নিয়ে আলতো হাতে আপনি আপনার মেকআপ রিমুভ করতে পারেন খুব সহজেই।

চোখের ফোলা ভাব কমায়
চোখের নিচের ফোলা ভাব নিয়ে আমরা অনেকেই বিড়ম্বনায় থাকি। চোখের ফোলা ভাব কমাতে গোলাপ জল ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে। এবার এই ঠাণ্ডা গোলাপ জল দিয়ে তুলা ভিজিয়ে চোখের পাতার ওপর কিছুক্ষণ বসিয়ে রাখতে হবে। এতে চোখে আসবে প্রশান্তির অনুভূতি, দূর হবে চোখের ফোলা ভাব।

মেকআপ সেটিং স্প্রে হিসেবে
মেকআপ তুলতে যেমন গোলাপ জল ব্যবহার করা যায় তেমনি মেকআপকে লং লাস্টিং করার জন্যও ব্যবহার করা যায়। মেকআপ করার পর সেটিং স্প্রে হিসেবে গোলাপ জল ব্যবহার করলে ত্বক থাকবে হাইড্রেটেড এবং মেকআপ হবে লং লাস্টিং।

ত্বকের সজীবতা ধরে রাখতে
সব সময় কি মেকআপ ব্যবহার করে ফ্রেশ দেখানো সম্ভব? অনেক সময় বাহিরে বের হওয়ার আগে মেকআপ ছাড়া মুখটা কেমন একটু ক্লান্ত দেখায়। তাই ত্বকের সজীবতা ফিরিয়ে আনতে ঘুম থেকে উঠে সকালে মুখে গোলাপ জল স্প্রে করতে পারেন। এতে ত্বককে দেখাবে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত। এছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার ফলে অনেক সময় আমাদের ত্বকে ক্লান্তির ছাপ পড়ে যায়। সেক্ষেত্রে একটু গোলাপ জল স্প্রে করে নিলে ত্বককে দেখায় সজীব।

ব্রণ হওয়ার প্রবণতা কমায়
রোজ ওয়াটারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিসেপটিক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, যা ব্রণ প্রতিরোধকারী হিসেবে কাজ করে। গোলাপ জল ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া রোধের পাশাপাশি ত্বকের দাগ কমাতেও সাহায্য করে। এছাড়া গোলাপ জল ত্বকের ইরিটেশন কমাতে সাহায্য করে। এর ফলে ত্বকের লালচে ভাব বা রেডনেস কমে আসে।

সানবার্ন দূর করে
আমরা অনেকেই সানবার্ন বা ত্বকের রোদে পোড়া সমস্যায় ভুগি। ত্বকের সানবার্ন বা রোদে পোড়া ভাব দাগ দূর করতে গোলাপ জল খুবই উপকারী। ঠাণ্ডা গোলাপ জল এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস কটন বলে ভিজিয়ে নিয়ে ত্বকের দাগের ওপর ব্যবহার করুন। বাহির থেকে এসে ত্বকে সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন। এতে ত্বকের রোদে পোড়া ভাব বা ত্বকের সানবার্ন দূর হবে।

পোরস ছোট করে
আমাদের ত্বকের পোরস কিংবা লোমকূপ থেকে সব রকমের ময়লা বের করে ফেলে গোলাপ জল। আর ভেতর থেকে পোরস পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার ফলে লোমকূপ ছোট হয়ে আসে এবং ব্রণ কিংবা একনে হওয়ার প্রবণতা কমে আসে।

ত্বককে হাইড্রেটেড করে
অনেক সময় ধরে এয়ার কন্ডিশনারের মধ্যে কাজ করলে ত্বকের হাইড্রেশন বা আর্দ্রতা হারিয়ে যায়। আবার অনেক সময় শরীরে পানির শূন্যতার কারণে ত্বকের হাইড্রেশন হারিয়ে যায়। এক্ষেত্রে ত্বকে হালকা গোলাপ জল স্প্রে করে নিলে ত্বকের হারানো হাইড্রেশন ফিরে আসে।

হেয়ার কন্ডিশনার হিসেবে
গোলাপ জল শুধু ত্বকের জন্যই উপকারী না, বরং চুলের জন্যও খুবই ভালো। চুলে শ্যাম্পু করার পর পরিমাণ মতো রোজ ওয়াটার দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। ন্যাচারাল কন্ডিশনার হিসেবে এটি খুব ভাল কাজ করে।

হাত পায়ের রুক্ষতা কমাতে
হাত-পায়ের রুক্ষতা কমাতেও গোলাপ জল বেশ কার্যকরী। শীতে যাদের হাত পায়ের চামড়া উঠে তারা রাতে ত্বকে গোলাপ জল ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া পায়ের গোড়ালি ফাটা সমস্যা সমাধানে গ্লিসারিনের সাথে কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করুন। এতে এ সমস্যা দূর হবে এবং ত্বক হবে মসৃণ।

প্যাক তৈরিতে
আমরা ত্বকের যত্নে বিভিন্ন ধরনের ফেইস মাস্ক বা প্যাক ব্যবহার করে থাকি। বিভিন্ন প্রাকৃতিক ফেইস প্যাক বানাতে আপনি গোলাপ জল ব্যবহার করতে পারেন। যেমন- মুলতানি মাটি, লিকোরিস পাউডার সহ বিভিন্ন প্যাক তৈরিতে আপনি কয়েক ফোঁটা রোজ ওয়াটার ব্যবহার করতে পারেন। এতে প্যাকটির কার্যকারিতা বহুগুণে বেড়ে যাবে।

সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী
অনেক প্রোডাক্ট কিংবা প্রাকৃতিক উপাদান আছে, যা সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী নয়। কিন্তু গোলাপ জল বা রোজ ওয়াটার সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী। ড্রাই, অয়েলি বা কম্বিনেশন স্কিন যেমনই হোক না কেন ত্বকে কোনো রকম জ্বালা-পোড়া বা ইরিটেশন ছাড়াই আপনি রোজ ওয়াটার ত্বকে ব্যবহার করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − 9 =